একটা সময় ফোন কথা বলার জন্য ব্যবহার করা হলেও বর্তমানে কিন্তু স্মার্টফোনগুলো শুধুমাত্র কথা বলার জন্য বা যোগাযোগ করার জন্য ব্যবহার করা হয়না। বরং, স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের অনেক বড় একটা অংশই বর্তমানে স্মার্টফোনে গেম খেলে থাকেন। স্মার্টফোনে এই গেম খেলার হার এতটাই বেশি যে যদি কোন সার্ভে করা যায় তবে হয়ত গেম খেলার ডিভাইসের তুলনায় কম্পিউটার হেরে যাবে স্মার্টফোনের তুলনায়। যাই হোক, যেহেতু মোবাইল প্ল্যাটফর্মে বর্তমানে গেম খুব বেশি জনপ্রিয়তা পেয়ে গিয়েছে তাই আজকে আমি বর্তমানের প্রযুক্তি বাজারে থাকা সেরা কিছু গেমিং স্মার্টফোন নিয়ে লেখার চেষ্টা করব। আশা করি যারা গেম খেলাকে মাথায় রেখে বা প্রায়োরিটিত শীর্ষে রেখে পরবর্তি সেরা গেমিং ডিভাইসটি কিনতে চাচ্ছেন তাদের কিছুটা হলেও কাজে আসবে এই লেখাটি। চলুন তাহলে, শুরু করা যাক।
স্যামসাং গ্যালাক্সি এস৭ এজ
বর্তমানে প্রযুক্তি বাজারে যে সকল শক্তিশালী অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন রয়েছে সেগুলোর মধ্যে স্যামসাং গ্যালাক্সি এস৭ এজ ডিভাইসটি রয়েছে তালিকার শীর্ষে। ডিভাইসটিতে যুক্ত করা হয়েছে সর্বাধুনিক স্ন্যাপড্রাগন ৮২০ প্রসেসর, অড্রিনো ৫৩০ জিপিইউ এবং ৪ গিগাবাইট র্যাম। এখনকার সব গেমতো ডিভাইসটিতে হাই গ্রাফিক্স সেটিংসে খেলা যাবেই, বলা চলে ভবিষ্যতের হাই কোয়ালিটি গেমগুলোও ডিভাইসটিতে সহজেই খেলা যাবে।
২০১৬ সালের এই স্যামসাং ফ্ল্যাগশিপ ডিভাইসটির মূল্য নিঃসন্দেহে কিছুটা বেশি কিন্তু আপনাকে এই ডিভাইসটি দিতে পারে সর্বোচ্চ স্মার্টফোন গেমিং এক্সপেরিয়েন্স। আগামী দুই বছরের টপ-লেভেল পারফর্মেন্সের স্মার্টফোনগুলোর মধ্যে এটি অবশ্যই থাকবে।
SAMSUNG Galaxy S7 Edge
ডিভাইসটির স্ক্রিনে কোন ব্যাজেল না থাকায় গেমিং এক্সপেরিয়েন্স আরও বৃদ্ধি পাবে খুব সহজেই! সেরা লুকের স্মার্টফোনটিতে সেরা সব কম্পোনেন্ট যুক্ত করার ফলে যদি এই ডিভাইসটিকে ডেডিকেটেড পোর্টেবল গেমিং ডিভাইসের সাথে তুলনা করা হয় তবুও খুব বাড়িয়ে বলা হবেনা আমার মতে।
স্যামসাং গ্যালাক্সি এস ৭ এজ
ডিভাইসটিতে রয়েছে একটি গেম লঞ্চার ফিচার যা আপাতত অন্য কোন ডিভাইসে পাওয়া যাবেনা। ফিচারটি অনেকটাই গেমিং সেন্টারের মত কাজ করবে যার মাধ্যমে আপনি আপনার গেমগুলোকে স্টোর এবং ক্যাটাগরাইজ করতে পারবেন। এতে আরও রয়েছে ফ্লটিং বাটন অ্যারেজমেন্ট যা গেম টুল নামেও পরিচিত যার সাহায্যে আপনি আপনার গেমপ্লে রেকর্ড করতে পারবেন খুব সহজেই।
এছাড়াও এই ডিভাইসটিতে সর্বপ্রথম ব্যবহার করা হয়েছে ভালকান এপিআই যাকে বর্তমানে মোবাইল গেমিং এর ভবিষ্যৎ হিসেবেই ধরা হচ্ছে।
নেক্সাস ৬পি
নেক্সাস ৬পি ডিভাইসটিতে ব্যবহার করা হয়েছে গতবছরের স্ন্যাপড্রাগন ৮১০ প্রসেসর এবং অড্রিনো ৪৩০ জিপিইউ। মাল্টি-টাস্ক এবং ল্যাগ ফ্রি গেমিং এক্সপেরিয়েন্সের জন্য এতে রয়েছে ৩ গিগাবাইট র্যাম। শুধু তাই নয়, ডিভাইসটিতে রয়েছে ৫.৭ ইঞ্চি আকারের একটি অ্যামোলেড স্ক্রিন যা ডিভাইসটিকে করে তুলেছে অত্যন্ত আকর্ষণীয়।
Google Nexus 6P
বর্তমানে আপনাকে একটি নেক্সাস ৬পি ডিভাইসের জন্য খরচ করতে হবে প্রায় ৪৫০ ডলারের মত যা গ্যালাক্সি এস৭ এজ ডিভাইসটি থেকে প্রায় ৩০০ ডলার কম। তবে কম দেখে ভেবে বসবেন না যে এটি গেমিং ইস্যুতে পিছিয়ে পরবে! ডিভাইসটিকে এপর্যন্ত তৈরি নেক্সাস ডিভাইসগুলোর মধ্যে সবচাইতে সেরা নেক্সাস ডিভাইস বলে আখ্যায়িত করা হয়। তাহলে বুঝতেই পারছেন এই ডিভাইসটিও আপনাকে চমৎকার গেমিং এক্সপেরিয়েন্স দিতে সক্ষম।
হুয়ায়েই গুগল নেক্সাস ৬পি
হার্ডওয়্যার স্পেসিফিকেশনের দিক থেকে নেক্সাস ৬পি ডিভাইসটি পিছিয়ে থাকলেও ডিসপ্লের দিক থেকে এটি এস৭ এজ ডিভাইসটি থেকে কিছুটা এগিয়ে থাকবে। কেননা এতে ব্যবহার করা হয়েছে অ্যামোলেড প্রযুক্তি; আর অ্যামোলেড প্রযুক্তি মানেই হচ্ছে চমৎকার কালার রি-প্রোডাকশন! পাশাপাশি ৬পি ডিভাইসটির ডিসপ্লের আকার এস৭ এজ থেকে কম হবার পরেও পিপিআই বেশি হওয়ায় কিছুটা ক্রিস্প আউটপুট পাওয়া যাবে নেক্সাসের ৬পি ডিভাইসটি থেকে।
এইচটিসি ১০
আপনি যদি স্মার্টফোনে গেম খেলার সময় জোড়াল শব্দ পছন্দ করে থাকেন তবে এই ডিভাইসটি আপনার জন্য হতে পারে একটি আদর্শ ডিভাইস। প্রতিষ্ঠানটি অনেক আগে থেকেই এর বুমসাউন্ড অডিওর জন্য বেশ প্রশংসা অর্জন করে নিয়েছে এবং এই ফিচারটি নতুন এই ডিভাইসটিতে গেমিং এক্সপেরিয়েন্সকে আরও একধাপ বাড়িয়ে দিয়েছে।
HTC 10
যাই হোক, স্পীকার চমৎকার শব্দের মাধ্যমে অন্যরকম আবহ তৈরি করলেও ডিভাইসটির মূল আকর্ষণ কিন্তু এখনও বাকিই আছে! ডিভাইসটিতে ব্যবহার করা হয়েছে স্ন্যাপড্রাগন ৮২০ প্রসেসর, অড্রিনো ৫৪০ জিপিইউ এবং ৪ গিগাবাইট র্যাম। বুঝতেই পারছেন, স্যামসাং গ্যালাক্সি এস৭ এজ এর সাথে সমানে সমানে টক্কর দিতে সক্ষম এইচটিসির এই ডিভাইসটি।
এইচটিসি ১০
এই ছিল আমার আজকের সেরা গেমিং স্মার্টফোনের তালিকায়! লিখতে লিখতে খেয়াল হল যে তালিকার সবগুলো ডিভাইসই ফ্ল্যাগশিপ ডিভাইস তাই চিন্তা করছি এরপর মিড-রেঞ্জের মধ্যে কিছু সেরা গেমিং ডিভাইস নিয়ে পোস্ট করব ।
0 comments:
Post a Comment