সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন। ইন্টারনেট বিশ্বে এর প্রয়োজনীয়তা ও চাহিদা ব্যাপক । আসুন এ বিষয়ে বেসিক একটা ধারণা নিয়েনি …..
এসইও বলতে কি বুঝায় ?
এসইও (সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন) হচ্ছে বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনের (যেমন : Google, Bing, Yahoo) নির্ধারিত নিয়মনীতি অনুসরণ করে এমন কিছু পদ্ধতি, যার মাধ্যমে ওই সব সার্চ ইঞ্জিনের রেজাল্ট পেজে আপনার সাইটের উপস্থিতি নিশ্চিত করা যায় এবং এর ফলে সাইটে কাঙ্ক্ষিত টার্গেটেড ট্রাফিক তথা ভিজিটর আনা সম্ভব হয়।
এসইও কেন প্রয়োজন ?
আমরা আমাদের বিভিন্ন ব্যক্তিগত বা কোম্পানির প্রয়োজনে বা সেবাদানের লক্ষ্যে ওয়েবসাইট তৈরি করে থাকি। কিন্তু এই ওয়েবসাইট তৈরির মূল উদ্দেশ্য থাকে কাঙ্ক্ষিত ট্রাফিক বা ভিজিটর। কারণ, আপনার সাইটে যদি ট্রাফিক না আসে, তাহলে ওই সাইট থেকে আপনি কোনো প্রকার বেনিফিট পাবেন না। আর সাইটে ট্রাফিক বা ভিজিটর বেশি পেতে হলে এটিকে সার্চ ইঞ্জিনের রেজাল্ট পেজের ওপরের দিকে নিয়ে আসতে হবে।
এর আসল কারন হল – অধিকাংশ ট্রাফিকই আসে সার্চ ইঞ্জিনে বিভিন্ন কি-ওয়ার্ডের মাধ্যমে সার্চ করে। আর এসব সার্চ ইঞ্জিনে র্যাঙ্কিংয়ে আসতে হলে আপনার সাইটটিকে উক্ত সার্চ ইঞ্জিনের নিয়মনীতি অনুসরণ করে যথাযথভাবে অপটিমাইজড করতে হবে। তবেই আপনি সার্চ ইঞ্জিনগুলো থেকে ভালো ট্রাফিক বা বিজিটর পেতে পারেন এবং এতে আপনি লাভবান হতে পারবেন। কারণ, ট্রাফিক = প্রফিট। ট্রাফিক যত বাড়বে, আপনার আয়ও তত বৃদ্ধি পাবে।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যেকোনো ছোট-বড় ব্যবসা বা ব্যক্তিগত কাজের জন্য ওয়েবসাইটকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। তাদের বেশির ভাগ কাজই অনলাইনের মাধ্যমে হয়ে থাকে। আর এ কারণেই তারা যার যার নিজস্ব সাইটকে সার্চ ইঞ্জিনে র্যাঙ্কিংয়ে আনতে চায়। আর তখনই তাদের প্রয়োজন পড়ে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের। কারণ, এসইও ছাড়া কোনো সাইটকে সার্চ ইঞ্জিনে ভালো অবস্থানে নিয়ে আসা সম্ভব নয়।
আমাদের দেশেও এখন ছোট – বড় ব্যবসার জন্য বা ব্যক্তিগত প্রয়োজনে অনেক ওয়েবসাইট তৈরি হচ্ছে। আর এসব সাইটের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে, অর্থাৎ সাধারণ জনগণের কাছে কাঙ্ক্ষিত কি-ওয়ার্ডের ভিত্তিতে এসব সাইটকে সার্চ ইঞ্জিনের র্যাঙ্কিংয়ে আনার জন্য এসইও দরকার।
আমাদের দেশেও ছোট-বড় সব সাইটের পরিচিতি ও ট্রাফিক বাড়ানোর জন্য সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনকে অনেক গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে এবং যতই দিন যাচ্ছে, এর চাহিদা ততই বাড়ছে।
এসইও কাদের জন্য ?
আপনারা এতক্ষণে নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন, এসইও কেন এতটা গুরুত্বপূর্ণ বা কেন এর চাহিদা এত বেশি। এবার আসুন কাদের এই এসইও সম্পর্কে ধারণা থাকা প্রয়োজন।
বর্তমান যুগে সবার কাছেই যেকোনো তথ্য বা সেবা পাওয়ার অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে এই ইন্টারনেট। বাসায় ডেস্কটপ, ল্যাপটপ বা টেবলেট ছাড়াও আমরা অনেকেই এখন মোবাইলের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকি এবং এর ব্যবহার দিনদিন বেড়েই চলছে । দৈনন্দিন জীবনে আমরা বিভিন্ন চাহিদা পূরণের জন্য এই ডিভাইসগুলো ব্যবহার করে থাকি।
মানুষ ব্যস্ততার মাঝে অনলাইনর মাধ্যমে খুব সহজেই কেনাকাটা করছেন । যেভাবে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে, সেভাবে অনলাইনে সেবাদানকারী সাইটের সংখ্যাও বাড়ছে। কয়েকটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি আরো পরিষ্কার হয়ে যাবে।
ধরুন , আপনি একটি ছোট্ট বুটিক হাউস বা রেস্টুরেন্ট চালাচ্ছেন। আপনি চাচ্ছেন, আপনার শহর বা এলাকার মধ্যে কেউ যদি আপনার এই সেবা অনলাইনে পেতে চায়, তাহলে সে যেন আপনার ওয়েবসাইটটিকে বুটিকস বা রেস্টুরেন্টকেন্দ্রিক যেসব কি-ওয়ার্ড আছে, এমন কিছু কি-ওয়ার্ডের জন্য আপনার সাইটটিকে সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম দিকে পায়। তাহলে আপনার ব্যবসার পরিচিতি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আপনার ব্যবসাকেও আরো উন্নতির পথে নিয়ে যাবে।
এখন মেইন ব্যাপারটা হল , এটি কীভাবে সম্ভব যে লাখ লাখ ওয়েবসাইটের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট কি-ওয়ার্ডের জন্য আপনার সাইটটিকে সার্চ ইঞ্জিনের রেজাল্ট পেজে নিয়ে আসবেন। তাই এর জন্য দরকার সার্চ ইঞ্জিন ফ্রেন্ডলি সাইট ও যথাযথভাবে এসইও করা ।
তাই যাদের এমন ছোট – বড় ব্যবসা আছে বা ই-কমার্স সাইট আছে বা সাইট করতে আগ্রহী, তাদের অবশ্যই এসইও জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। কারণ, এসইও ছাড়া কখনই একটি সাইটকে সার্চ ইঞ্জিনের র্যাঙ্কিংয়ে নিয়ে আসা সম্ভব নয়। আর সাইট যদি র্যাঙ্কিংয়ে না আসে, তাহলে আপনি ভিজিটর বা ট্রাফিক পাচ্ছেন না আর ট্রাফিক না পেলে সেই সাইট থেকে কোনো প্রকার প্রফিট পাচ্ছেন না ।
তাছাড়া এখন অনেকেই পারসোনাল ব্র্যান্ডিং বা পরিচিতির জন্য ওয়েবসাইট তৈরি করেন এবং এর মাধ্যমে অনলাইন বা ভার্চুয়াল জগতে নিজের অবস্থান তুলে ধরেন । ধরুন – আপনি আপনার নিজের নামে একটি সাইট তৈরি করেছেন এবং সাইটটি যথাযথ সার্চ ইঞ্জিন ফ্রেন্ডলি করেছেন। এখন কেউ যদি আপনার নাম লিখে গুগল ( সার্চ) করে এবং আপনার সাইটটিকে যদি প্রথমে পায়, তাহলে আপনি নিজেই ভেবে দেখুন আপনার গ্রহণযোগ্যতা কতটুকু বেড়ে যাবে এবং পরিচিতির ক্ষেত্রে কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
সুতরাং শুধু ব্যবসার জন্যই নয়, নিজের পরিচিতি বা বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়াতে একটি ওয়েবসাইট থাকা দরকার। আর এই ওয়েবসাইটের পপুলারিটি বাড়াতে আপনার এসইও জানা জরুরী ।
কারা এসইও শিখতে পারবেন ?
এসইও শেখার শুরুটা তেমন কঠিন কিছু নয় । আপনার বেসিক কিছু জ্ঞান থাকলেই আপনি এসইও শিখতে পারবেন, যেমন—
বেসিক কম্পিউটার চালানোর দক্ষতা : আপনার কম্পিউটারের সাধারণ ব্যবহার ও সঠিকভাবে পরিচালনা করতে জানতে হবে এবং ইন্টারনেট এর ব্যবহার সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে।
ইংরেজিতে দক্ষতা : আপনার ইংরেজি জ্ঞান ভালো হলে আপনি ভালোভাবে এসইওর কাজ বুঝতে বা করতে পারবেন। প্রতিনিয়ত আপনাকে এসইওর আপডেট সম্পর্কে জানতে হলে প্রচুর স্টাডি করতে হবে এবং যার মাধ্যম হল ইংরেজি।
যদিও এসইও শেখাটা কঠিন নয় , তবে এর গভীরতা অনেক বেশি । কেননা, এটি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া এবং আপনার নিজের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখতে হলে সব সময় কাজ চালিয়ে যেতে হবে, নিত্য নতুন কৌশল সম্পর্কে জানতে হবে এবং এগুলোর সঠিক প্রয়োগ বুঝতে হবে।
কীভাবে এসইও শিখবেন ?
১. গুগল করে বিভিন্ন ওয়েব সাইটের মাধ্যমে এসইও সম্পর্কে ব্যাপক ধারণা লাভ করতে পারেন ।
২. ইউটিউব এ এসইও বিষয়ের উপর বাংলা এবং ইংরেজি মাধ্যমে প্রচুর ভিডিও টিউটোরিয়াল পাওয়া যায় । টিউটোরিয়াল গুলো দেখে আপনি এসইও শিখতে পারেন ।
তাছাড়া একটি ভালো মানের প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে আপনি এসইও এর মৌলিক ধারণা লাভ করতে পারেন ।
কীভাবে এসইও ক্যারিয়ার শুরু করবেন?
এসইওতে কাজ শুরু করতে চাইলে প্রথমে আপনি যেকোনো একটা এসইও সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করতে পারেন, যারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বা ক্লায়েন্টকে এসইও সেবা প্রদান করে। এতে করে আপনার অভিজ্ঞতা বাড়বে এবং আপনি বুঝতে পারবেন যে বর্তমানে এসইওর কাজ কীভাবে করা হয়ে থাকে।
আপনি চাইলে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে কাজ করার মাধ্যমেও আপনার এসইও ক্যারিয়ার শুরু করতে পারেন। বর্তমানে এমন অনেক ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস রয়েছে, যেখানে অসংখ্য এসইও রিলেটেড কাজ পাবেন। এখান থেকে আপনার পছন্দ বা যোগ্যতা অনুযায়ী কাজে বিড করে কাজটি করতে পারবেন। এখানে আপনি এসইওর বিভিন্ন অংশের ছোট – বড় অনেক কাজ পাবেন।
0 comments:
Post a Comment