বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার যৌথ উদ্যোগে গাজীপুরের কালিয়াকৈর হাইটেক পার্কের ৫ নম্বর ব্লকে স্মার্টফোন ও ট্যাব তৈরি করার মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার। রোববার সকালে কালিয়াকৈর হাইটেক পার্কের ৫ নম্বর ও ২ নম্বর ব্লকে সামিট টেকনোপলিস লিমিটেডের সিগনেচার বিল্ডিং ও ম্যানুফেকচারিং বিল্ডিংয়ের গ্রাউন্ড ব্রেকিং উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার যৌথ উদ্যোগে গাজীপুরের কালিয়াকৈর হাইটেক পার্কের ৫ নম্বর ব্লকে স্মার্টফোন ও ট্যাব তৈরি করার মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার। রোববার সকালে কালিয়াকৈর হাইটেক পার্কের ৫ নম্বর ও ২ নম্বর ব্লকে সামিট টেকনোপলিস লিমিটেডের সিগনেচার বিল্ডিং ও ম্যানুফেকচারিং বিল্ডিংয়ের গ্রাউন্ড ব্রেকিং উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ল্যাপটপ ও স্মার্টফোন তৈরির কার্যক্রম উদ্বোধনের সময় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, আমাদের দেশে প্রচুর পরিমাণে স্মার্টফোন ও ল্যাপটপ প্রয়োজন। বিদেশ থেকে এসব আমদানি করতে প্রচুর টাকা বাইরে চলে যায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে আমরা হাইটেক পার্কের ৫ নম্বর ব্লকের এক একর জমিতে স্মার্টফোন ও ল্যাপটপ তৈরি করবো। এখানে লক্ষাধিক তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। এ কাজে শ্রীলঙ্কা আমাদের পাশে থাকবে। তিনি আরো বলেন, আজকে অত্যন্ত আনন্দের দিন। কারণ, বাংলার মাটিতে তৈরি হবে স্মার্টফোন ও ল্যাপটপ। সে কাজই শুরু হতে যাচ্ছে।
পলক বলেন, বাংলাদেশে প্রতিবছর ৩ লাখ ল্যাপটপ ও ৫ কোটি মোবাইল ফোন আমদানি করতে হয়। এ বছরও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৩৪ হাজার ল্যাপটপ বিতরণ করেছি। এসব ডিভাইস আর আমদানি করা লাগবে না। এই হাইটেক পার্ক থেকেই দেশের চাহিদা পূরণ করতে পারবো। প্রতিমন্ত্রী বলেন, কালিয়াকৈর হাই-টেক পার্কে সামিট টেকনোপলিসের স্থাপনা নির্মাণের মধ্য দিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণের যাত্রা শুরু হবে। এতে আগামী ১০ বছরে প্রায় ৭০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে। বিদেশী বিনিয়োগও বাড়বে সে সঙ্গে। ২৩২ একর জমির মূল পার্কটির ২ নং ব্লকে ৬২ একর ও ৫ নং ব্লকের ২৯ একর জায়গায় সামিট টেকনোপলিস লিমিটেডের সিগনেচার বিল্ডিং ও ম্যানুফ্যাকচারিং বিল্ডিংয়ের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। ব্লক দুটিতে এ ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান ২০ কোটি ৭৫ লাখ ৯০ হাজার ডলার বিনিয়োগ করবে।
পলক আরও বলেন, ৭ বছর আগে আইসিটি এক্সপোর্ট ছিল মাত্র ২৬ মিলিয়ন (ইউএস) ডলার, বর্তমানে তা দাঁড়িয়েছে ৩ শত মিলিয়ন ডলারেরও বেশি। সরকারের পরিকল্পনা হচ্ছে ৫ বিলিয়ন ডলার আইসিটি এক্সপোর্ট করব। সেটা হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার ও সার্ভিস সেক্টর থেকে। এ লক্ষ্যে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আইটি এবং আইসিটি সেক্টরে আয়কর সম্পূর্ণ মওকুফ করা হয়েছে। মন্ত্রী আরও বলেন, আগামী ৩ বছরের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তিতে ৪৫ হাজার আইটি এবং আইটিএস গ্র্যাজুয়েটদের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। একটি স্কিল্ড, ইকোইফট এবং ডিজিটাল রেডি একটি জেনারেশন তৈরি করার জন্য এ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। সরকারের তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে এ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যাতে আইটি সেক্টরে কোন সার্ভিস কর্মী সঙ্কটের সৃষ্টি না হয়।
পার্কে প্রথমবারের মতো প্রযুক্তি পণ্য উৎপাদনে সামিট গ্রুপ ও শ্রীলঙ্কার প্রতিষ্ঠান ইডব্লিউআইএস কলম্বো যৌথভাবে কাজ শুরু করেছে। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজ খান, ইডব্লিউআইএস কলম্বোর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সানজিওয়া এ উইকরা মানায়েক প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, গাজীপুরের কালিয়াকৈরে হাইটেক পার্ক স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ১৯৯৯ সালে। বড় আকারের বহুজাতিক কোম্পানি বা মূলধনসমৃদ্ধ বিশ্বমানের বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে কালিয়াকৈরে ২৩১ দশমিক ৬৮৫ একর জমি অধিগ্রহণ করে সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে হাইটেক পার্কের অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়। হাইটেক পার্কে বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির জন্য বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ আইন ২০১০ প্রণয়ন করা হয়েছে। এর আওতায় বিধি প্রণয়নের কাজও চলছে। বিনিয়োগকারীদের জন্য কী সুযোগ-সুবিধা দেওয়া যায় সেজন্য একটি প্রাথমিক খসড়াও প্রণয়ন করা হয়েছে।
0 comments:
Post a Comment